শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৪

বৃষ্টি কথা বলো- রাশেদুজ্জামান রন।

আমি ছুট্টি দিলাম তোমাদের
কষ্টের ছটায় আর ভেঙ্গে পড়তে হবেনা
ক্যানো কুড়োবে বাষ্পীয় ভালবাসা
গুমোট ভাব ভুলে মেতে ওঠো
হিমেল হাওয়াকে ডেকোনা
থাকি কিছুদিন ছন্নছাড়া
চলো ঘুরতে যাই মাসি-পিসির বাড়ী
কিংবা আড্ডাবাজ বন্ধুকে দেখে আসি
খুঁজুক তারা, ডাকুক দেখি...!


হন্যে হয়ে খুঁজছি শীতল বিবিকে
গাছ-গাছালী খুঁজছে তাকে
পাখ-পাখালী অস্থির তার জন্যে
তার চেয়েও বেশি চায় আদম পাখি
ভালবাসা নয়, শারীরিক চাহিদা

না বুঝে কষ্ট দিয়েছি অনেক
বুঝে দিয়েছি তার চেয়েও বেশি
অভিমানী চোখের জল শুকিয়েছে
কথা নেই মুখে
শুধু পালিয়ে বেড়ানো

তোমাদের ছুটি, শেষ কবে,
বলে যাও প্রিয়!
ফিরে এসো, সূর্যকে দাও ছুট্টি!

২৬.০৪.১৪

বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৪

চিঠি দিও -মহাদেব সাহা

করুণা করে হলেও চিঠি দিও,
খামে ভরে তুলে দিও
আঙ্গুলের মিহিন সেলাই।

ভুল বানানেও লিখো প্রিয়,
বেশি হলে কেটে ফেলো তাও,
এটুকু সামান্য দাবি, চিঠি দিও, তোমার শাড়ির মতো
অক্ষরের পাড়-বোনা একখানি চিঠি।

চুলের মতন কোনো চিহ্ন দিও বিস্ময় বোঝাতে যদি চাও...
বর্ণণা আলস্য লাগে তোমার চোখের মতো চিহ্ন কিছু দিও!

আজো তো অমল আমি চিঠি চাই, পথ চেয়ে আছি,
আসবেন অচেনা রাজার লোক
তার হাতে চিঠি দিও,
বাড়ি পৌঁছে দেবে....

এমন ব্যস্ততা যদি শুদ্ধ করে একটি শব্দই শুধু লিখো, তোমার কুশল!...

করুণা করে হলেও চিঠি দিও,
ভুলে গিয়ে ভুল করে একখানি চিঠি
দিও খামে।
কিছুই লেখার নেই তবু
লিখো একটি পাখির শিস
একটি ফুলের ছোট নাম,
টুকিটাকি হয়তো হারিয়ে গেছে কিছু,
হয়তো পাওনি খুঁজে
সেইসব চুপচাপ কোন দুপুরবেলার গল্প
খুব মেঘ করে এলে কখনো কখনো বড় একা লাগে, তাই লিখো।

করুণা করে হলেও চিঠি দিও,
মিথ্যা করে হলেও বোলো, ভালবাসি!

আমি খুব অল্প কিছু চাই ! -হুমায়ুন আহমেদ

আমাকে ভালবাসতে হবে না,
ভালবাসি বলতে হবে না.
মাঝে মাঝে গভীর আবেগ
নিয়ে আমার ঠোঁট
দুটো ছুয়ে দিতে হবে না.
কিংবা আমার জন্য রাত
জাগা পাখিও
হতে হবে না.
অন্য সবার মত আমার
সাথে রুটিন মেনে দেখা
করতে হবে না. কিংবা বিকেল বেলায় ফুচকাও
খেতে হবে না. এত
অসীম সংখ্যক “না”এর ভিড়ে
শুধু মাত্র একটা কাজ
করতে হবে আমি যখন
প্রতিদিন এক বার “ভালবাসি” বলব
তুমি প্রতিবার
একটা দীর্ঘশ্বাস
ফেলে একটু
খানি আদর মাখা
গলায় বলবে “পাগলি”

বিশ্বাস কর !

দুঃখপোষা মেয়ে -তসলিমা নাসরিন

কান্না রেখে একটুখানি বস
দুঃখ-ঝোলা একেক করে খোল...
দেখাও তোমার গোপন ক্ষতগুলো
এ ক'দিনে গভীর কতো হল।

ও মেয়ে, শুনছ !

বাইরে খানিক মেলে দাও তো এসব
দুঃখ তোমার একদম গেছে ভিজে...
হাওয়ার একটি গুণ চমৎকার
কিছু দুঃখ উড়িয়ে নেয় নিজে।

ও কী গুণছ !
দিন!

দিন তো যাবেই ! দুঃখপোষা মেয়ে !
শুকোতে দাও স্যাঁতস্যাঁতে এ জীবন
রোদের পিঠে, আলোর বিষম বন্যা
হচ্ছে দেখ, নাচছে ঘন বন...
সঙ্গে সুখী হরিণ।

ও মেয়ে হাসো,
নিজের দিকে দু'চোখ দাও,
নিজেকে ভালোবাসো।

খেলাঘর –নির্মলেন্দু গুণ

শিশুরা খেলাঘর করে ।
তারা হাঁড়ি-পাতিল, বাসন-কোসন নিয়ে
বড়দের মতো সংসার সংসার খেলে ।
তারপর একসময় ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে
ঘুমভাঙ্গার পর শুরু হয় তাদের অন্যখেলা ।
এক্কা-দোক্কা, গোল্লাছুট কিংবা
কানামাছি ভোঁ ভোঁ !

বড়োরাও খেলাঘর করে ।
তাদের বাসন-কোসনগুলো আকৃতিতে বড়ো,
তাদের কামনা বাসনার মতো ।
তারা তাদের খেলাঘরের নাম রাখে সংসার ।
শিশুদের মতো তারাও ক্লান্ত হয় ,
তারাও সংসার ভাঙ্গে, কিন্তু শিশুদের মতো
তারা ঘুমুতে পারে না ।

অমীমাংসিত সন্ধি- হেলাল হাফিজ

তোমাকে শুধু তোমাকে চাই, পাবো ?
পাই বা না পাই এক জীবনে তোমার কাছেই যাবো ।

ইচ্ছে হলে দেখতে দিয়ো, দেখো
হাত বাড়িয়ে হাত চেয়েছি রাখতে দিয়ো, রেখো ।

অপূর্ণতায় নষ্টে কষ্টে গেলো
এতোটা কাল, আজকে যদি মাতাল জোয়ার এলো
এসো দু’জন প্লাবিত হই প্রেমে
নিরাভরণ সখ্য হবে যুগল-স্নানে নেমে ।

থাকবো ব্যাকুল শর্তবিহীন নত
পরস্পরের বুকের কাছে মুগ্ধ অভিভূত ।

নাগরিক ভালবাসা- রাশেদুজ্জামান রন।

যে তোমার সাথে কথা বলতাম, ঘন্টার পর ঘন্টা
কারণে আর অকারণে
কথা শেষ হতে না হতেই ভাবতাম
কি যেনো বলা হলোনা!
আবার ডায়াল করার সাথেই
ফোনটা বেজে উঠতো বিরক্তি সহকারে
তোমার আনন্দের কাছে তা ছিল
অতি গৌণ!


সেই তুমি আজো আছো
একই শহরে, পাশাপাশি
তোমাকে ভাবতে গেলেই
কারণ খুঁজতে হয়
অকারণে সেলফোন থাকে বহুদুরে
কী বলবো, সাজাতে হয় মনে মনে
তোমার দেয়া সুনীল, সঞ্জীব
আজ ধুলোয় মাখামাখি
হুমায়ুন পড়ে আছে বড় অযতনে
শুধু র‍্যাপিং পেপারে মোড়ানো
আমাদের ভালবাসা
সেই আগের মতোই দোলা দিয়ে যায়!


২৩.০৪.২০১৪

রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৪

অদৃশ্য ভালবাসা- রাশেদুজ্জামান রন।

সে এসেছিল,
চলে গিয়েছে
তার চলে যাওয়াতে
আমি খুশি হয়েছি!
কথা দিয়েছে,
এক গাল হাসি-আনন্দ নিয়ে
আবার আসিবে ফিরে...!
আমি কি তার জন্য অপেক্ষায় থাকবো

যদি সে না আসে আর
কিংবা আলোর রোশনাইয়ে পথ হারায়
অথবা অজানার দেশে থেকে যায় অনন্ত কাল
হয়তো ফেরা হলোনা কোনোদিন
আবার এমনও তো হতে পারে
সে চেয়েছে কেউ অপেক্ষায় থাকুক...!
এমন অনেক কিছুই মনের মাঝে উঁকি দিয়ে যায়
দোলাচলে দোলে দেহ-মন।
সন্দেহ নেই, তাকে ভালবাসি
কিন্তু কেন, তা জানিনা
এই না জানাই হতে পারে সব প্রশ্নের উত্তর!

তবুও অপেক্ষায় থাকবো
হোকনা যতই ক্ষতি
থমকে গেলেও আপত্তি নাই!

সখী ভালবাসা কারে কয়
কষ্ট কষ্ট সুখের অসুখ
ধীরে ধীরে ক্ষয়!


২০.০৪.২০১৪

বুধবার, ২ এপ্রিল, ২০১৪

দাগ টেনে যায়- রাশেদুজ্জামান রন।

বলি রেখা,
তুমি কেমন আছো, বয়সের ভারে কি নূজ্ব হয়ে পড়েছো

করুণ হাসি তোমার ঠোঁটে একদম মানাচ্ছেনা!
কপাল হতে কপোলে এসেছো, তবুও পথচলা শেষ হয়নি,
সমস্ত তনু জড়িয়ে আছো পরম মমতা-ভালবাসায়
বলি রেখা, এসব হচ্ছে কি

আর কতদিন, চিন্তাগুলি তোমার কোলে ধরে রাখবে,
তোমার কি অবসর নেই,
কাঁদছো তুমি

যৌবনে কত স্বপ্ন দেখেছো, পুড়িয়েছো কত দুঃখ-ব্যথা
বহন করেছো সূখের আশায় মিথ্যে কত স্বপ্ন সাধ
তাহলে কেন ভেঙ্গে পড়েছো

ওঠো! দাঁড়িয়ে দেখো পুবাল হাওয়া
অনুভবে আনো চির শান্তি
মিলিয়ে যাও গভীর বিষাদে
অনেক দূরে পালিয়ে যাও
হয়তো তোমার আশা পূরণ হবে
বলি রেখা তুমি শান্ত হও

এই না হলো সাহস তোমার। কথা মানতে পারো তুমি
কেটে গেল অ...নে...ক দিন!

ওমা! লক্ষ্মী বলি রেখা, তুমি ফিরে এসেছো
সত্যি বন্ধু, তোমার ভীষন প্রয়োজন এই দুর্দিনে
বলি রেখা তোমার নিস্তার নেই।
থাকো আমার সাথে...!




২৭।০৮।০৪